চালের দাম কেন বাড়ছে, কীভাবে সামাল দেবে সরকার?
বাংলাদেশের বাজারে সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করেই চালের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহে চিকন চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা এবং মোটা চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ব্রি ধান-২৮ এর মতো মধ্যম মানের চাল পাইকারি বাজারে ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাস্তবে অনেক বাজারে এই চাল ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
দাম বৃদ্ধির কারণ
আমন ধানের মৌসুম হিসেবে পরিচিত শীতের শুরুতে এমন মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি মনে করেন, এটি সাময়িক মজুতদারির ফল।
অন্যদিকে, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানান, গত বছর দেশের কিছু জেলায় অকাল বন্যার কারণে আমনের উৎপাদন কম হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার চাল আমদানির ওপর থেকে শুল্ক ও কর প্রত্যাহার করেছে।
মজুতদারির অভিযোগ
মজুতদারির অভিযোগ নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন চালকল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোই বেশি চাল মজুত করছে। বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এ এম লায়েক আলী জানান, "এবার কোনো মিলারই অতিরিক্ত চাল মজুত করেননি। বরং অধিকাংশ মিলারের কাছে সরকার নির্ধারিত মজুতও নেই।"
সরকারের পদক্ষেপ
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার চাল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
এই সংকট কাটাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অযৌক্তিক দাম বৃদ্ধি রোধে বাজার তদারকি জোরদার এবং ন্যায্যমূল্যে চাল সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।